সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারনা নেই। যদিও আমরা সামাজিক সংগঠন তৈরি করতে অনেকেই পছন্দ করি। আজ আমরা এ বিষয় নিয়েই বিস্তারিতো আলোচনা করবো।

তবে কমিটি গঠনের নিয়ম সম্পর্কে জানার পূর্বে,আমাদোর জানতে হবে-সামাজিকি সংগঠন কি?
সামাজিক সংগঠন হলো- সমাজের সৌন্দর্য, সম্পর্ক, এবং সম্প্রতি – ভালোবাসা বৃদ্ধি করার জন্য একটি মিলনস্থান।
যার মাধ্যমে এক বা একাধিক সমাজের কিছু মানুষদের মধ্যে তৈরি হয় একটি পরিবার। একটি ইউনিয়ন বা এলাকা তৈরি হয় এক একটি ঘড়ের ছঁাদের মতো।
একটি ছাদের নিচে থেকেই সবার সাথে সবার মতবিনিময় তথা ভাব আদান-প্রদান তৈরি হয়। এই মতবিনিময় আর ভাব আদান-প্রদান এর মধ্য দিয়েই কিছু কিছু সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য সকলে মিলে একটি অঙ্গিকার হয়।
অন্যভাবে বললে- সামাজিক সংগঠন বলতে সেই সংগঠন সমূহকে বুঝায়,যা কিছু সংখ্যক লোকজনের যৌথ চেষ্টায় শিক্ষা, শান্তি, সম্প্রতি, সৌহার্দ ও সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রথা বা সার্বিক উন্নয়নের লক্ষে কাজ করাকে বুঝায়। যেখানে এক বা একাধিন সমাজের কিছু মানুষের মাঝে তৈরি হয় একটি পরিবার।
সামাজিক সংগঠন কি?
সামাজিক সংগঠন বলতে সেই সংগঠন সমূহকে বুঝায়- যা কতিপয় ব্যাক্তি বিশেষের যৌথ উদ্যোগে শিক্ষা, শান্তি, সম্প্রতি, সৌহার্দ ও সংস্কৃতি সহ ইত্যাদি সার্বিক সামাজিক উন্নয়ন মূলক কাজ করার লক্ষে গঠন করা হয়।
যেখানে একই সমাজের কিছু মানুষের মাঝে তৈরি হয় একটি পরিবার।একই পরিবারের সবার সাথে সবার ভাব আদান প্রদানের মধ্যদিয়ে কিছু সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য অংগীকারবদ্ধ হওয়া।
আরো পড়ুন… মেয়েদের দুধ কেন ব্যথা করে?
সামাজিক সংগঠনের স্লোগান কেন দরকার?
রাষ্ট্রের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও দেশপ্রেমের অাগ্রহ ছড়াতে সামাজিক সংগঠনের বিকল্প নেই।

সামাজিক সংগঠন থেকে আমরা যে সকল বিষয়ে শিক্ষা লাভ করতে পারি এবং আমরা সামাজিক ভাবে যে জ্ঞান অর্জন করতে পারি তার মূল অংশ বিশেষ আলোচনা করা হলো-
ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি:
সামাজিক সংগঠন তথা একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ববোধ সুসংগঠিত হয়। আর এটাই সামাজিক সংগঠনের স্লোগান।
যে কারনে আমরা সবাই হাতে হাত মিলিয়ে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দিধায় কাজ করে যেতে পারি।
ভ্রাতৃত্ববোধের কারণে আমাদের মধ্যে ধনি-গরিব, ছোট-বড়, লম্বা-বেটে, কালো-ফর্সা এরকম কোন ভেদাভেদ থাকে না। সবাই মিলে তৈরি হয়ে যাই একটি শরীরের মতো যেখানে লজ্জা ভুল আর ভয় বলতে কিছুই থাকেনা।
সমাজ থেকে হিংসা- বিদ্বেষ, রাগ – অভিমান, ঝগড়া বিবাধ দূর হয়ে যায়। থাকেনা কোন প্রকার অসামানজষ্যতা। সকল ভেদাভেদ দূর হয়ে যায়, যার ফলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় এবং সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যায়।
দেশপ্রেম:
দেশপ্রেম একটি মহৎ কাজ যা সামাজিক সংগঠন এর মাধ্যমে করা হয়। প্রত্যেক ধর্মের, ধর্মীয় গ্রন্থে দেশপ্রেম মহৎ কাজ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যে কারনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অামাদের প্রত্যেকের মনে নিজের দেশের প্রতি প্রেম বা ভালোবাসা থাকাটা জরুরি। তাই তো কবি বলেছিলেন-
স্বদেশের উপকারে নাহি যার মন
কে বলে মানুষ তারে, পশু সেইজন।
আরো পড়ুন… কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়
যাইহোক, দেশপ্রেম মানে দেশের কল্যাণে কাজ করাকেই বুঝায়, যা এজনের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। আর এই অসম্ভব কাজকেই সম্ভব ও সহজ করে তুলতে সংগঠন তৈরি করা বা সংগঠনের অাওতাভুক্ত থাকাটা অতি জরুরী।
তাই আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারি যে- আমরা সামাজিক সংগঠনের সাথে থাকবো এবং সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম সম্পর্কে যেনে কমিটি গটন করবো।।
উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড:
সামাজিক সংগঠন কেনো প্রয়োজন তা সমাজ বা দেশের উন্নয়ন মূলক কাজকর্ম করতে গেলে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। সমাজ ও জাতির উন্নয়ন মূলক কাজকর্ম করা একার পক্ষে সম্ভব না। তাই সামাজিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
সমাজের যুবকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলবদ্ধ ভাবে সমাজের উন্নয়ন মূলক কাজ করলে সমাজের কার্যক্রম খুব দ্রততম সময়ে সামনের দিকে অনেক এগিয়ে নেয়া যায় ।
সমাজের এই উন্নয়নমূলক কাজকে বৃদ্ধি করে নিতে পারলেই অামাদের পক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ, সমৃদ্ধির বাংলাদেশ আর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ নির্মান করা সম্ভব হবে।
শিক্ষা:
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। যে জাতি যতবেশি শিক্ষিত, সেই জাতি ততো বেশি উন্নতো। শিক্ষা ছাড়া কোন কিছুই তুলনা বা কল্পনা করা যায় না। সকল উন্নতির মূল চাবিকাঠি হলো শিক্ষা।
সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অামার সোনার বাংলার সোনার যুবক-যুবতীরা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাবে। আর তখনই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল হয়ে পরিচিত লাভ করবে।
নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন:
দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য যেমন সামাজিক সংগঠন প্রয়োজন। তেমনি সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজে,সভা, সেমিনারে নেতৃত্ব দিতে হয়। এতে নেতার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা ও গুণাবলি বহু গুনে বৃদ্ধি পায়। যারই ফলস্রুতিতে পরবর্তীতে সেই নেতা দেশের বিভিন্ন কাজে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখে। ফলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মূর্খ ভূমিকা পালন করে।
আত্নমানবতার কল্যাণে:
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রত্যেকটি সামাজিক সংগঠন দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণের স্বার্থে কাজ করে। যার বাস্তব প্রমান আমরা দেখতে পাই দেশের বিভিন্ন সংকট ও বিপদ আপদে।
যেমন- ঝড়,তুফান,জলোচ্ছ্বাস, মহামারি, অগ্নিকাণ্ডের মতো বড় বড় আপদকালীন সময়ে আমরা সংগঠনের ভূমিকা দেখতে পাই। সংগঠনের সদস্যরা যে ভাবে তাদের জীবনকে বাজি রেখে হাজারো বিপদ উপেক্ষা করে ক্ষেয়ে না-খেয়ে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসে, তা অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা চেষ্টা করে কিভাবে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের মানুষদের সেবায় কাজ করা যায়। সামাজিক সংগঠন গুলো বিভিন্ন ক্যাম্পেই,সভা-সমাবেশ, সেমিনার, লিফলেট বিতরনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সমাজ ও দেশের মানুষের জনসচেতন মূলক কাজ করে থাকে।
আরো দেখুন……. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট এর উপকারিতা
কমিটির সংগঠন কাকে বলে?

কোন বিশেষ কাজ সম্পন্ন করার জন্য যে ভার/ দায়িত্ব কমিটির উপর অর্পণ করা হয় এবং কমিটিতে থাকা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে যে সম্পর্কের অবকাঠামো তৈরি হয় তাকে কমিটি সংগঠন বলে।
সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম
সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠন করার জন্য আমাদের খেয়াল রাখতে হবেন। সংগঠনে কত জন সদস্য রয়েছে। এদের পরিচালনার জন্য প্রধান কমিটির সাথে কতজন সহকারী দিলে ভালো হবে।

আমি বুঝাতে চাচ্ছি, আমাদের দেশের মানুষ বেশিরভাগই কর্মজীবী। কেউ শহর অঞ্চলে আবার কেউ গ্রাম অঞ্চলে কর্মরতো থাকে। তাই গ্রাম ও শহরের কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য। অবশ্যই কমিটির সাথে সহকারী রাখাটা জরুরী।
সৎ, যোগ্য ও কর্মঠো সদস্যদের কমিটিতে রাখাটাই হলো সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম। আর এই কাজটি করতে নিয়েই, আমরা হোচট খেয়ে পরে যাই। নতুন নতুন সংগঠন তৈরী হওয়া মাত্রই ভেঙ্গে যায়।
কারন আমরা সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম বা সামাজিক সংগঠনের নিয়মাবলী আপনি যাই বলুননা কেনো।
আমরা কমিটি গঠন করার নিয়ম বলতে বুঝি-আমাদের সমাজের বড়বড় ধনবানের কমিটিতে রাখতেই হবে। তাদের বড় পদে দিতেই হবে। যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুন।
অপরদিকে অযোগ্য সদস্যদের যখন কমিটিতে দেয়া হয়। তখনে সে তার পদের গৌরব নিয়েই চলে। সদস্যদের উপর কেমন জানি একটা আদেশ দিতে শুরু করে। যেখানে যে কাজ করা দরকার সে কাজ করে পারে না। আর তখনই সংগঠন ভাঙ্গার উপক্রম হয়ে পরে। তাই আমি বলবো কমিটি গঠনের পূর্বে আমার এই সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম ব্লগটি সকল সদস্যদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। যাতাহে তারা যোগ্য সদস্যদের কমিটিতে নিয়ে আশার বিষয়টা বুঝতে পারে।
সংগঠনে কমিটির পদ সংখ্যা কত?
কিছু সংখ্যক সদস্য দ্বারা তৈরি হয় একটি সংগঠন। এই সংগঠন সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন কমিটি। আপনারা কয়জন কে নিয়ে কমিটি গঠন করবেন, তা নির্ভর করে আপনাদের সদস্য সংখ্যা এবং আপনাদের ইচ্ছার উপরে। তবে আহবায়ক কমিটি ১১ জন নিয়েই গঠন করলে ভালো হয়।
আপনারা চাইলে আরও কম বা বেশি সংখ্যক পদ দিয়ে কমিটি গঠন করতে পারবেন। তবে একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন- সৎ ও যোগ লোকদেরকে কমিটির পদ দিবেন যারা সদস্য পরিচালনা করতে স্বক্ষম। তাতে কমিটির পদ সংখ্যা কম হলেও চলবে।
সংগঠন কাঠামো কাকে বলে?
সংগঠনের বিভিন্ন পদে নিয়োজিত কমিটি ও সহকারী কমিটির মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাকে সংগঠন কাঠামো বলে।
সংগঠন চিত্র কাকে বলে?
সংগঠনের বিভিন্ন পদে নিয়োজিত কমিটি ও সহকারী কমিটির দক্ষতায় সদস্য ও কমিটির মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ওঠে। তাকে সংগঠন চিত্র বলে।
কার্যভিত্তিক সংগঠন কাকে বলে?
যে সামাজিক সংগঠনের নিয়মাবলী অনুযায়ী বড়বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেক কমিটিকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয় তাকে কার্যভিত্তিক সংগঠন বলে।
মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠকবৃন্ধ, সামাজিক সংগঠন কেনো প্রয়োজন এবং সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম সম্পর্কে আশাকরি আপনারা একরা সুস্পষ্ট ধারনা পেয়েছেন।
আগামি পোস্টটি কোন বিষয়ে হবে। তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে “ধন্যবাদ”।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন
[…] আরও পড়ুন… সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম […]
[…] আরও পড়ুন… সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম […]